বাংলা সাহিত্যে মূলত মধ্যযুগ থেকে অনুবাদ সাহিত্যের শুরু হয়। অনুবাদ মূলত তিনটি ভাষা থেকে হয়েছিল। যার মধ্যে সংস্কৃত থেকে বাংলা এবং আরবি ও ফারসি থেকে বাংলা।
ক. সংস্কৃত থেকে বাংলাঃ সংস্কৃত থেকে বাংলা ভাষায় অনুবাদ হয়েছে এমন কয়েকটি উল্লেখ যোগ্য অনুবাদ হলঃ রামায়ণ, মহাভারত, ভগবত।
রামায়ণঃ রামায়ণের রচয়িতা হল বাল্মীকি। তিনি তমসা নদীর তীরে বসে এটি রচনা করেন। রামায়ণের ভাষা ছিল সংস্কৃত। এটি সর্বপ্রথম বাংলায় অনুবাদ করেন কৃত্তিবাস ওঝাঁ। তাকে অনুবাদ করতে নির্দেশ দেন গিয়াসউদ্দীন আজম শাহ। রামায়ণের প্রথম চরিত্র রাম, লক্ষণ, সীতা। রামায়ণের সর্বপ্রথম মহিলা অনুবাদক হলেন চন্দ্রাবতী। তার পিতার নাম দ্বিজ বংশী দাস। তিনি কিশোরগন্জ অঞ্চলে বাস করতেন।
মহাভারতঃ মহাভারত এর রচয়িতা হল বেদব্যাস। এটিও সংস্কৃত ভাষায় রচিত। মহাভারতের মূল বিষয় হল কৌরব পাণ্ডবদের গৃহবিবাদ এবং কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের ঘটনাবলী। এ যুদ্ধ মোট ১৮ দিন ধরে চলে ছিল। মহাভারতের প্রথম অনুবাদক কবীন্দ্র পরমেশ্বর। তার অনুবাদের নাম দেন ‘পরাগলী মহাভারত’। তবে বাংলা মহাভারতের শ্রেষ্ঠ অনুবাদক হলেন কাশীরাম দাস।
ভগবতঃ ভগবত এর রচয়িতা হলেন বেদব্যাস। এর দশম ও একাদশ অধ্যায় নিয়ে রচিত হয় ‘শ্রী কৃষ্ণবিজয়’ কাব্য রচিত হয়। এটি রচনা করেন মালাধর বসু। মালাধর বসুর উপাধি ‘গুণরাজ দাস’।
খ. আরবি ও ফারসি থেকে অনুবাদঃ মুসলমান কবিগণ আরবি ও ফারসি থেকে অনেক অনুবাদ রচনা করেন। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলঃ ইউসুফ জুলেখা, লায়লী-মজনু, হাতেম তাই, পদ্মাবতী, কারবালা ও শহরনামা ইত্যাদি। ইউসুফ জোলেখা অনুবাদ করেন শাহ মুহম্মদ সগীর। তিনি প্রথম বাঙালী মুসলমান কবি। এ কাব্যের কাহিনীর পটভূমি হল ইরান।
বিসিএস, প্রিলি প্রস্তুতি সহ বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় আসা গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তরঃ
১. রামায়ণের প্রথম মহিলা অনুবাদকের নাম কি?
উত্তরঃ চন্দ্রাবতী।
২. বাংলা ভাষায় সর্বপ্রথম কে রামায়ণ রচনা করেন?
উত্তরঃ কৃত্তিবাস।
৩. রামায়ণ রচিত হয় কোন ভাষায়?
উত্তরঃ সংস্কৃত ভাষায়।
৪. রামায়ণ রচয়িতার নাম কি?
উত্তরঃ বাল্মীকি।
৫. বাংলা অনুবাদ কাব্যের সূচনা হয় কোন যুগে?
উত্তর? মধ্যযুগে।
৬. বাংলায় কৃত্তিবাসকে রামায়ণ অনুবাদের অনুরোধ করেন কে?
উত্তরঃ গিয়াস উদ্দীন আজম শাহ।
৭. সীতা কোন মহাকাব্যের চরিত্র?
উত্তরঃ রামায়ণ।
৮. কোন নদীর তীরে বাল্মীকি রামায়ণ রচনা করেন?
উত্তরঃ তমসা।
৯. বাংলা সাহিত্যের প্রথম মহিলা কবি কে?
উত্তরঃ চন্দ্রাবতী।
১০. দ্রোপদী কে?
উত্তরঃ মহাভারতের পাঁচ ভাইয়ের একক স্ত্রী।
১১. পরাগলী মহাভারত খ্যাত গ্রন্থের অনুবাদক কে?
উত্তরঃ কবীন্দ্র পরমেশ্বর।
১২. মহাভারতের শ্রেষ্ঠ অনুবাদক কে?
উত্তরঃ কাশীরাম দাস।
১৩. কবি চন্দ্রাবতী কোন অঞ্চলের মানুষ ছিলেন?
উত্তরঃ কিশোরগঞ্জ।
১৪. কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধ কত দিন ধরে চলেছিল?
উত্তরঃ ১৮ দিন।
১৫. প্রণয়োপাখ্যানগুলোর প্রধান বৈশিষ্ট্য হল-
উত্তরঃ মানবিক প্রেম।
১৬. বাংলা সাহিত্যের প্রথম প্রণয়োপাখ্যান কোনটি?
উত্তরঃ ইউসুফ জোলেখা।
১৭. রোমান্টিক প্রণয়োপাখ্যান ধারার প্রথম কবি হলেন-
উত্তরঃ শাহ মুহম্মদ সগীর।
১৮. কোন কবি গিয়াস উদ্দীন আজম শাহের রাজ কর্মচারী ছিলেন?
উত্তরঃ শাহ মুহম্মদ সগীর।
১৯. কারবালা ও শহর নামা কাব্যগ্রন্থটির রচয়িতা কে?
উত্তরঃ আবদুল হাকিম।
২০. ‘সপ্ত পয়কর’ কার রচনা?
উত্তরঃ সৈয়দ আলাওল।
২১. লায়লী মজনুর উপাখ্যান কোন দেশের?
উত্তরঃ ইরান।
২২. লাইলী মজনু উপাখ্যান এর অনুবাদক হলেন –
উত্তরঃ দৌলত উজির বাহরাম খান।
২৩. নবীবংশ পুস্তকটি কার রচনা?
উত্তরঃ সৈয়দ সুলতান।
পোস্ট থেকে আপনি উপকৃত হলে আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন আশা করি। ধন্যবাদ।